জাতীয় ডেস্ক : ১০ বছর পর আবারও পিসবিল্ডিং কমিশনের সভাপতি নির্বাচিত হলো বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) নিউ ইয়র্কে মিশরের কাছ থেকে ২০২২ সেশনের জন্য এই দায়িত্ব গ্রহণ করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা।
প্রসঙ্গত, এর আগে এই পদে কোনও নারী ছিলেন না। রাবাব ফাতিমাই প্রথম নারী চেয়ার হিসেবে পিসবিল্ডিং কমিশনে নেতৃত্ব দেবেন।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন মঙ্গলবার রাতে বলেন, পিসবিল্ডিং কমিশনের সক্রিয় সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ সব সময় কাজ করেছে। কিন্তু কমিশনে সভাপতিত্ব করার বিষয়টি নিঃসন্দেহে অত্যন্ত সম্মান ও গৌরবের।’ ২০১২ সালে সর্বশেষ পিস বিল্ডিং কমিশনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সেই সময়ে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বর্তমান পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। ওই ফোরামে তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম প্রতিনিধি।
বাংলাদেশের আজকের জয়ের বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং জাতিসংঘে যারা শান্তি রক্ষার সঙ্গে জড়িত, তারাই শুধুমাত্র এর সদস্য। বাংলাদেশের ওপর ওইসব সদস্যের আস্থা আছে বলেই তারা আমাদের স্থায়ী প্রতিনিধিকে একবছরের জন্য সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন।’
পিসবিল্ডিং কমিশনে শান্তিরক্ষা ও পিসবিল্ডিং নিয়ে আলোচনা হয় এবং নীতি নির্ধারণ করা হয় জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘এখানে বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হলেও বাংলাদেশের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমকে তুলে ধরার একটি সুযোগ থাকবে।’
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশকে নিয়ে কারও যদি কোনো সমস্যা থাকে, তবে পিসবিল্ডিং এর সভাপতি হিসেবে আমরা কিছুটা বাড়তি সুবিধা পাবো, আমাদের অবস্থানকে তুলে ধরার জন্য।’ মানবাধিকার লংঘনের গুরুতর অভিযোগে র্যাব সদস্যদের শান্তি মিশনে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে জাতিসংঘকে চিঠি দিয়েছে ১২টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন। ওই চিঠির প্রসঙ্গে সচিব বলেন, ‘যে কেউ চিঠি লিখতে পারে। তবে এর মাধ্যমে জাতিসংঘের নীতির পরিবর্তন হবে, এটা আমরা মনে করি না।’
এদিকে জাতিসংঘ মিশন জানিয়েছে, মঙ্গলবার নির্বাচনী সেশনের সমাপনী পর্বে সভাপতিত্ব করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ দূত গুরুত্বপূর্ণ ওই পদের দায়িত্বভারও গ্রহণ করে নিয়েছেন। উল্লেখ্য, পিস বিল্ডিং কমিশন (পিবিসি) একটি আন্তঃসরকারি উপদেষ্টা সংস্থা যা সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে শান্তি বিনির্মাণের জন্য কাজ করে, যাতে সংঘাতের পুনরাবৃত্তি রোধ করার চেষ্টা করে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে ভুমিকা পালন করে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ, নিরাপত্তা পরিষদ এবং ইকোসক থেকে নির্বাচিত ৩১ জন সদস্যের সমন্বয়ে ২০০৫ সালে পিবিসি প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতিসংঘ ব্যবস্থায় শীর্ষ আর্থিক অবদানকারী এবং শীর্ষ শান্তরক্ষী প্রেরণকারী দেশগুলিও কমিশনের সদস্য। বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের সর্বোচ্চ সদস্য প্রেরণ কারী রাষ্ট্র।