সাতক্ষীরা প্রতিনিধি(আজহারুল ইসলাম সাদী): ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অন্তত ২০টি পয়েন্টে পাউবো’র বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ মে) আশাশুনি উপজেলার বড়দল ও খাজরা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায়, “ঘূর্ণিঝড় ইয়াস” এর প্রভাবে প্রবল জোয়ারের পানিতে ভেঙে যাওয়া বেড়ীবাঁধের, নির্মাণের কাজ পরিদর্শন করে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাজমুল হুসেইন খাঁন ও ইউপি চেয়ারম্যানদ্বয়ের নেতৃত্বে স্থানীয় প্রায় দুই হাজার লোক দ্রুতগতিতে চালিয়ে যাচ্ছেন, বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, পিআইও মোঃ সোহাগ খান, বামনডাঙ্গা ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মনীন্দ্রনাথ ঢালী, ইউপি সদস্য দিলীপ কুমার সানা, সাংবাদিক বি এম আলাউদ্দিন প্রমুখ।
উপজেলার ২০ কিলোমিটার বেড়ীবাঁধ ঝুঁকিতে থাকায় এলাকার মানুষ চরম আতঙ্কে রয়েছেন। বুধবার সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে নদ-নদী উত্তাল হয়ে ওঠে। হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টি এবং ঝড়ো হাওয়া উপকূলবর্তী প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাহনিয়া লঞ্চঘাটের দক্ষিণ পাশে দু’টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ভেতরে প্রবেশ করতে শুরু করে, পরবর্তীতে কিছুক্ষণের মধ্যেই পুনরায় প্রবল বেগে ৩০০ ফুট এর মত বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ভিতরে ঢুকতে শুরু করে।
ফলে বন্যতলা, চাকলা, কল্যাণপুর, রুইয়ের বিল, আনুলিয়া ইউনিয়নের নাকনা সহ ৬টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ওভারফ্লো হয়। আশাশুনি সদর ইউনিয়নের বলাবাড়িয়া, জেলেখালী, মানিকখালী, শ্রীউলা ইউনিয়নের হাজরাখালি, পুইজালা, কাকড়াবুনিয়া, কলিমাখালী, বড়দলের কেয়ারগাতি, বানমনডাঙ্গা, খাজরার গদাইপুর, কাদাকাটির আদর্শগ্রাম সংলগ্নসহ কয়েকটি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ও ওভারফ্লো হয়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, পাাউবো’র কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদ, প্রশাসন ও স্থানীয় জনসাধারণ সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ রক্ষার কাজে এগিয়ে যান।
আশাশুনি উপজেলায় ১১০ কিঃমিঃ পাউবো’র বেড়ী বাঁধ রয়েছে, এরমধ্যে ২০ কিঃমিঃ বাঁধের অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বছরের পর বছর এই ২০ কিঃমিঃ বাঁধ টেকসই করার দাবী জোরালো ভাবে উচ্চারিত হলেও অদ্যাবধি সেটা বাস্তবায়ন হয়নি?
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সচেতন মহল বলেন, প্রতাপনগরে জাইকার উদ্যোগে বাঁধ রক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখনো কাজ শুরু হয়নি।
ফলে বাঁধ ওভারফ্লো ও ভাঙ্গনের ঘটনা ঘটেছে, টেকসই বেড়ীবাঁধ নির্মান ও বাঁধের লেবেল উচু না করা হলে এমন ঘটনা প্রতি বছর ঘটতেই থাকবে বলে তারা মনে করেন।
আশাশুনি উপজেলা চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম বলেন, ইয়াসের ঝুঁকি থাকায় এলাকার ঝুকিপূর্ণ স্থানে বাঁধ রক্ষার জন্য জন প্রতিনিধিদের মাধ্যমে ঝুকিপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়, বাঁধ গুলি রক্ষার ব্যাপারে সহযোগিতা করছি।