মানবচিত্র ডেস্ক : অন্তর্র্বতী সরকার পরিচালনায় অদক্ষতা জনগণ সহজভাবে মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, মাফিয়া সরকারের ১৬ বছরে তৈরি করা জঞ্জাল তিন মাসে দূর করা সম্ভব না। কিন্তু তিন মাস পর সরকারের সফলতা কিংবা ব্যর্থতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন ওঠা অন্যায্য কিংবা অস্বাভাবিকও নয়। জনগণের সব দাবি পূরণ করা হয়তো অন্তর্র্বতী সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু সরকার পরিচালনায় যদি অদক্ষ পরিলক্ষিত হয়, সেটাও কিন্তু জনগণ আবার সহজভাবে মেনে নেবে না।
শনিবার রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টটিটিউডে জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের (জেটেব) তৃতীয় জাতীয় কাউন্সিলে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সকালে এই অনুষ্ঠানে উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। এই কাউন্সিলে কাউন্সিলারদের ভোটে ফখরুল আলমকে সভাপতি ও রুহুল আমিন আকন্দকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।
তারেক রহমান বলেন, সরকারকে ব্যর্থ করতে পলাতক স্বৈরাচার এবং তার দোসররা বসে নেই। সেটা দেশের ভেতরেই হোক বা দেশের বাইরে হোক। এরা ওত পেতে রয়েছে কীভাবে এই সরকারকে ব্যর্থ করা যায়। জনগণ যা চাইছে অন্তর্র্বতী সরকার যদি সেগুলোকে ধারণ করে তাহলে ষড়যন্ত্রকারীরা কোনো সুযোগ পাবে না।
তিনি বলেন, জনগণের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করা না যায় তাহলে গণতন্ত্র, উন্নয়ন কেনোটাই টেকসই হবে না। একজন নাগরিকের রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রথম হাতিয়ার হচ্ছে ভোট প্রয়োগের অধিকার। যদি জনগণ ভোট প্রয়োগ করার সুযোগ না পায় তাহলে রাষ্ট্রের সঙ্গে নাগরিকদের যে সম্পর্ক-অংশীদারিত্ব সেটা সৃষ্টি হয় না। আমরা দেখেছি, অন্তর্র্বতী সরকার নির্বাচন কমিশন পুনঃগঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। জনগণ আশা করছে যে, তারা স্বচ্ছ পরিবেশে নির্ভয়ে ভোট দিতে সক্ষম হবে।
তিনি আরও বলেন, বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনার পদক্ষেপ অন্তর্র্বতী সরকারের গুরুত্বের তালিকায় কত নম্বারে আছে? সমাজের প্রতিটা মানুষ, প্রত্যেকটি পরিবার কষ্টের মধ্যে আছে। অন্তর্র্বতী সরকারের সকল কাজ হয়ত সবার কাছে সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হবে না। তবে এই সরকারের ব্যর্থতা কিন্তু আমাদের সকলের ব্যর্থতা। গণতন্ত্রকামী স্বাধীনতা প্রিয় মানুষের ব্যর্থতা।
তারেক রহমান বলেন, এরকম একটা পরিস্থিতিতে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের কিছু কিছু সিদ্ধান্ত জনআকাঙ্খার প্রতি ভ্রুক্ষেপ করছে না। বরং তারা যেটা ভালো মনে করছে সেটাই হয়ত চাপিয়ে দিতে চাইছে। এই অপ্রাপ্তি থাকার পরেও জনগণ কিন্তু এখনো এই সরকারের প্রতি আস্থা রাখতে চায়, তারা আস্থা হারাতে চাইছে না।
একটি দেশের রাজনীতি যদি রুগ্ন হয় তাহলে কিন্তু এর অর্থনীতিও কিন্তু রুগ্ন হতে বাধ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বৈরাচারের আমলে আমরা সেটা দেখেছি। কয়েকটি মেগা প্রজেক্ট আমরা দেখেছি। সেটা কিন্তু আসলে উন্নয়নের চিত্র না। এখন অর্থনীতি শুরু করে সবকিছুর রূপ ধীরে-ধীরে বেরিয়ে আসছে।
কাউন্সিলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশের মানুষের যে আকাঙ্খা, সেই আকাঙ্খা হচ্ছে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের। গণতান্ত্রিক সমাজের সেই আকাঙ্খাটাকে বাস্তবায়িত করতে আমাদের যে সমস্যাগুলো সৃষ্টি হচ্ছে, সেগুলো দূর করতে হবে। সময় যত বেশি যাবে তত বেশি সমস্যা তৈরি হবে। আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থা, আমাদের নির্বাচন কেন্দ্রিক প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিচার ব্যবস্থা এগুলো সংস্কার করেই আমাদেরকে অতি দ্রুত নির্বাচনে যাওয়াটাই হবে এদেশের মানুষের জন্য সবচেয়ে কল্যাণের।
জেটেবের সভাপতি ফখরুল আলমের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, ফরহাদ হালিম ডোনারসহ টেক্সটাইল প্রকৌশলী নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।