রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি (এম শামসুল আলম) : রাজশাহী জেলাধীন তানোর উপজেলায় দিন দিন বেড়েই চলেছে ভূয়া প্রাণী চিকিৎসক।
তাদের স্বীকৃত কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাণী চিকিৎসকের বৈধ্য কোনো ডিগ্রী বা অভিজ্ঞতা সার্টিফিকেট নেই। তবুও এরা অভিজ্ঞ প্রাণী চিকিৎসক দ্বাবী করে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন উপজেলার সকল এলাকা জুড়ে। তানোর উপজেলা সদরসহ প্রত্যন্ত পল্লী এলাকার আনাচে-কানাচে অবৈধ চিকিৎসালয় খুলে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন এসব কথিত প্রাণী চিকিৎসক।
অধিকাংশক্ষেত্রে তাদের অনেকেই স্কুলের গন্ডি পেরুতেও পারেনি। কিন্তু নামের আগে বাহারি নামের সব ডিগ্রী বসিয়ে চিকিৎসার নামে সাধারণ মানুষের সাথে করে যাচ্ছেন প্রতারণা। উপজেলা জুড়ে কথিত প্রাণী চিকিৎসকেরা প্রাণী চিকিৎসার নামে প্রতারণা ও সাধারণ মানুষের পকেট কেটে নিজেদের পকেট ভারী করে চলেছেন। কিন্তু উপজেলায় দ্বীর্ঘ প্রায় এক যুগেও এসব কথিত প্রাণী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে প্রশাসন থেকে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায়- সাধারণ মানুষ অনেকটা হতাশ ও হতভম্ব হয়ে পড়েছেন। এসব কথিত প্রাণী চিকিৎসকদের প্রতারণা বন্ধে প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনার অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
স্থানীয়রা জানান; এসব কথিত পশু চিকিৎসকদের চিকিৎসা কার্যক্রম ও দোকান সরেজমিন পরিদর্শন করা হলেই এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে। অল্প পুঁজিতে বা কখানো কখানো বিনা পুঁজিতে অধিক মুনাফা হওয়ায়, তাই উপজেলা জুড়েই ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে প্রাণী চিকিৎসক।
স্থানীয়রা আরও জানান, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভার বাজার-হাটে ও মোড়ে-মোড়ে কোন প্রকার প্রশিক্ষণ ছাড়াই অবাধে ঔষুধের দোকান খুলে পশু চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন প্রাণীর সব ধরণের রোগের চিকিৎসা দিয়ে আসছেন।
এমনকি তারা গ্রামে-গ্রামে বাড়ী-বাড়ী গিয়েও ঔষধ বিক্রি করছেন। তারা নাম সর্বস্ব কোম্পানীর নিম্নমাণের ঔষুধ বিক্রি করে প্রতারণা করেও আসছেন তারা। অভিযোগ রয়েছে, সাধারণ মানুষ ঔষুধের বিষয়ে তেমন সচেতন না হওয়ায় সেই সুযোগ নিয়ে নকল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষুধ বিক্রি করা হচ্ছে অহরহ। অথচ এদের নেই কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রী ও রোগ নির্ণয়ের অভিজ্ঞতা। কিন্তু চিকিৎসক পরিচয়ে অনুমান নির্ভর হয়ে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা করে যাচ্ছেন। অধিকাংশক্ষেত্রে এদের খপ্পরে পড়ে গবাদি পশুর মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। এরা সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিয়ে বিক্রি করছেন ভুঁইফোড়ের মতো মাথা চাড়া দেওয়া নিম্নমানের কোম্পানীর ঔষুধ। কারণ তারাই চিকিৎসক; আবার তারাই ঔষুধ বিক্রেতা। ফলে অধিক মুনাফার আশায় উচ্চ মুল্যর অপ্রোজনীয় ঔষুধ কিনতে প্রাণী মালিকদের বাধ্য করা হচ্ছে। তারা আরও বলেন; তাদের চিকিৎসায় অনেক গবাদি প্রাণীর মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ে অভিযোগ করেও কোনো ফায়দা হয়নি।
এবিষয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সুমন মিয়া বলেন; আমি এখানো এগুলোর কোনো বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাইনি, তবে এবিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ-খবর নিয়ে দেখা হবে।
এবিষয়ে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ড. জুলফিকার মোহাম্মদ আকতার হোসেন বলেন; প্রশিক্ষন ছাড়া প্রাণী চিকিৎসা দেয়ার কোন সুযোগ নাই। তিনি আরও বলেন; উপজেলা হতে অভিযোগ পেলে- এবিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।।