রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি (এম শামসুল আলম) : রাজশাহী জেলাধীন তানোর উপজেলার অন্তর্ভূক্ত মুণ্ডুমালা পৌরসভার বহুল আলোচিত-সমালোচিত মেয়র সাইদুরের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুর দামী জায়গা দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগে পাওয়া যায়; মুণ্ডুমালা পৌর মেয়রসহ তার গুণ্ডা বাহিনী দ্বারা হিন্দু সম্প্রদয়ের লোকজনকে এলাকা ও দেশ ছাড়াসহ প্রাণে মেরে ফেলার হুমিকিও দিয়েছেন।
একারণে সংখ্যালঘুরা চরম আতংকে দিন পার করছেন বলে সত্যতা মিলেছে।
মুণ্ডুমালা পৌর এলাকার মুণ্ডুমালা মহিলা কলেজ সংলগ্ন উত্তর পার্শ্বের জমির উপর ঘটেছে জবর দখলের ঘটনাটি।
এঘটনায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সুবোধ চন্দ্র বর্মন বাদি হয়ে মেয়রসহ তার কয়েকজন সহচরের নাম উল্লেখ করে চলতি মাসের ১৮ এপ্রিল জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। তার অনুলিপি পুলিশ সুপার (এসপি), উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, থানার ওসি, মুণ্ডুমালা পুলিশ ফাঁড়ি, স্থানীয় প্রেস ক্লাব ও বাংলাদেশ হিন্দু বদ্ধ খ্রীষ্টান পরিষদে ডাক যোগে প্রেরণ করেছেন।
তবে অভিযোগের ১০ দিন অতিবাহিত হলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহন না হওয়ার কারণে চরম হতাশায় ভুগছেন বাদি।
যার ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরেজমিনে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন না হলে; পরিবার-পরিজন নিয়ে দেশ ত্যাগ ছাড়া আর কোন উপায় থাকবেন বলে দ্বাবী অবসরপ্রাপ্ত সংখ্যালঘু শিক্ষকের।
সরেজমিনে দেখা যায়; মুণ্ডুমালা মহিলা কলেজের দেয়ালের উত্তর পার্শ্বে সুবোধ চন্দ্র বর্মনের ১৫.৫০ শতাংশ জমি রয়েছে। ইতিপূর্বে উক্ত মহিলা কলেজে মেয়র সাইদুর নাইড গার্ডের চাকুরীরত অবস্থা থেকেই জবর দখলের পাঁয়তারা করে আসছিলেন। বর্তমানে সে মেয়রের ক্ষমতায় বসে- সেই জায়গায় মাটি দিয়ে ভরাট করে দখলে নিয়েছেন মেয়র সাইদুর। শুধু মাটি ফেলে ভরাট করেননি; বেশ কয়েকটি আমগাছের ডাল পালাও কেটেছেন। ওই সব ডালে প্রচুর আমও ছিল। জায়গার পশ্চিমে তেমন বাড়ী-ঘর নাই। তারপরও জোর পূর্বক ও ক্ষমতার দাপটে দখল করেছেন। ওই জায়গা থেকে উত্তরে ৭ ফিট রাস্তা আছে।
মেয়র সাইদুর জানান; জায়গার মালিককে একাধিকবার বলা হয়েছে, যেন আমিন এনে মাপ করে বুঝে নিতে, কিন্ত সে তালবাহানা করছে। এজন্য মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। মাপজোকের পর সীমানা নির্ধারন করেছি কিন্তু আরো বেশী ছাড়তে বলেছেন।
তিনি আরো জানান; এটা তাদের বাড়াবাড়ী, এই বলে তিনি কথা এড়িয়ে যান।
জায়গার মালিক সুবোধ চন্দ্র জানান; জায়গাটা অনেক দামী, এজন্য মেয়রের কুনজর পড়ে জবর দখল করছেন। জায়গা ছাড়ার পরও আরো দ্বাবী করছেন। আম থাকা ডালপালা কেটে ফেলেছে। শুধু তাই না; আমি একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আমার শরীরে আঘাত পর্যন্ত করেছে। এখন তারা হুমকি দিয়ে বলছে হয় জায়গা ছাড় না হয় দেশ ছাড়। এদের অত্যাচারে হয় তো ভারতেই চলে যেতে হবে!
অভিযোগে উল্লেখ; মুণ্ডুমালা পৌরসভার ৬৮ নম্বর সাদিপুর মৌজার আরএস ১৩৫ নম্বর খতিয়ান ভুক্ত প্রস্তাবিত ৭৮৫ খতিয়ানে আরএস ৭৪৭ দাগে ১৫.৫০ শতাংশ জমির মালিক সুবোধ চন্দ্র বর্মন। জায়গাটি প্রচুর দামী, এজন্য মাটি ভরাট করে সে তার গুণ্ডা বাহিনী নিয়ে জবর দখল করেছেন।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পংকজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন; অভিযোগ পাওয়া গেছে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামিম আহম্মেদের সরকারী মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও রিসিভ হয়নি।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেনের সরকারী মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলে- তিনিও ফোন রিসিভ করেননি।।