মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মালদ্বীপের চেয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। বৈশ্বিক র্যাংকিংয়ে এক্ষেত্রে ১৪৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০১তম। ভারত ও মালদ্বীপের অবস্থান যথাক্রমে ২২ ও ৩০তম। অর্থাৎ ভারতের চেয়ে ৭৯ ধাপ এবং মালদ্বীপের চেয়ে ৭১ ধাপ পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওকলার স্পিডটেস্ট গ্লোবাল ইনডেক্সে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মোবাইল ইন্টারনেটের গতি নিয়ে প্রতি মাসে হালনাগাদ তথ্য দেয় ওকলা। তাদের তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে দেশে মোবাইল ইন্টারনেটের ডাউনলোড স্পিড ছিল ২৩ দশমিক ৮৭ এমবি, আপলোড স্পিড ছিল ১০ দশমিক ৮২ এমবি, ল্যাটেন্সি ছিল ২৫ এমএস (মিলি সেকেন্ড)।
দুই প্রতিবেশীর চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও গত বছরের নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে চার ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। এক মাসের ব্যবধানে র্যাংকিং ১০৫ থেকে উঠে এসেছে ১০১ নম্বরে। অন্যদিকে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের তালিকায় বাংলাদেশ ছিল ১২১তম। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে র্যাংকিংয়ে উন্নতি হয়েছে ২০ ধাপ। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ডাউনলোড স্পিড ছিল ১৪ দশমিক ৩৪ এমবি, আপলোড স্পিড ৮ দশমিক ৯৯ এমবি এবং ল্যাটেন্সি ছিল ২৮ এমএস। সে হিসাবে এক বছরে ডাউনলোড স্পিড বেড়েছে ৯ দশমিক ৫৩, আপলোড স্পিড বেড়েছে ১ দশমিক ৮৩ এমবি এবং ল্যাটেন্সি কমেছে ৩ এমএস।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব লে. কর্নেল জুলফিকার (অব.) বলেন, ওকলার সাম্প্রতিক ইনডেক্স অনুযায়ী বাংলাদেশের গড় মোবাইল ইন্টারনেটের গতি প্রায় ২৪ এমবিপিএস। গ্রাহকদের দৈনন্দিন ব্যবহার বিবেচনায় এ স্পিড সন্তোষজনক। তবে আরো উন্নতির অবকাশ রয়েছে। এ ধরনের আন্তর্জাতিক রেটিং নির্ণয়ে ইন্টারনেটের গতি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হলেও এর সঙ্গে সমসাময়িক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং গ্রাহকদের ইউজেস প্যাটার্নসহ আরো অনেক বিষয় বিবেচিত হয়। তারই প্রভাব এ রেটিংয়ে দেখা গেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মোবাইল খাতে সার্বিক বিনিয়োগের বিপরীতে রিটার্ন যেমন কম, তেমনি গ্রাহকদের কাছ থেকে অপারেটরদের মাথাপিছু গড় আয়ও (এআরপিইউ) কম। অপরদিকে, এ আয় থেকে সরকারকে প্রদেয় নানাবিধ ট্যাক্সের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে অন্যান্য দেশের চেয়ে অনেক বেশি। এছাড়াও আমাদের টেলিকম অবকাঠামোতে অনেক অংশীজন থাকায় মোবাইল ইকোসিস্টেমে অংশীজনদের ওপর কারিগরি ও আর্থিক নির্ভরতাও অনেক বেশি। ফলে মোবাইল ইন্টারনেট খাতের গুণগত মানোন্নয়নে এসব বিষয়ে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।