মিষ্টি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ তুলেছেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান
- আপডেট সময় Thursday, April 17, 2025
- 39 Time View
অনলাইন ডেস্ক : মিষ্টি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। তিনি বলেন, আমি নিজেও বহু মিষ্টির দোকান থেকে মিষ্টি কিনেছি। কোনো দোকানদার ভ্যাটের চালান দেন না। তারা ভ্যাট আদায়ের যন্ত্র ইএফডিও ব্যবহার করেন না।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনে প্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
মিষ্টির ওপর ভ্যাট কমানোর প্রস্তাব দিয়ে বাংলাদেশ সুইটস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব শ্রী ননী গোপাল ঘোষ বলেন, মিষ্টির ওপর যখন সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট ছিল তখন অনেক বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে।
জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আপনি বলছেন ফ্রি করে দিলে রাজস্ব বাড়বে। এটা একটা আজগুবি কথা। আপনি ১৫ শতাংশের ওপর অংক করে দেখলেন রাজস্ব আদায় কম, সাড়ে ৭ শতাংশ বেশি হয় এরকম জাদুকরী দেশে বাস করলে তো হবে না। আমি নিজেও বহু মিষ্টির দোকান থেকে মিষ্টি কিনেছি। কোনো দোকানদার ভ্যাটের রিসিট দেন না। ইএফডিও ব্যবহার করেন না। এটা সমস্যা আছে। ভ্যাট দেয় জনগণ। আমি যত মিষ্টি কিনেছি এ জীবনে সব জায়গায় ভ্যাট দিয়েছি, কিন্তু আমার ভ্যাট সরকারের কোষাগারে আসে নাই। আমার তো বহু বয়স হয়েছে। এ পর্যন্ত দেখলাম না কোনো মিষ্টি দোকানদার আমাকে ভ্যাটের রিসিট দিয়েছে।
মিষ্টিতে সুপারশপের মতো ভ্যাট ইনক্লুসিভ করার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা মিষ্টির দামে ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত করব। ইনক্লুসিভ করব। ভ্যাট আলাদা করে ধরা হবে না। ক্রেতা ভ্যাট দেখে চমকে উঠবে না। এমন একটা আদেশ প্রস্তুত করছি। টোটাল ভ্যালুর ওপর ভ্যাট ধরব। ক্রেতার জানার দরকার নাই যে তিনি কত টাকা ভ্যাট দিয়েছেন। এ একই জিনিস আমরা সুপারশপে করেছি।
বিদেশ ভ্রমণে ট্রাভেল ট্যাক্সের টাকা সরাসরি যাত্রীদের কাছ থেকে সরকার নিতে চায় বলেও জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। তিনি বলেন, এ ট্রাভেল ট্যাক্স এয়ারলাইনস কোম্পানিগুলো টিকিটের মূল্যের সঙ্গে সংগ্রহ করে। কিন্তু, কখনো কখনো কোম্পানিগুলো এই টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দেয় না বা কোম্পানি দেউলিয়া হয়ে যায় বা তারা ব্যবসা বন্ধ করে চলে যায়। তাই আমরা চাচ্ছি যাত্রীদের ট্রাভেল ট্যাক্স যাত্রী নিজে দেবে। তারা টাকা জমা দিয়ে চালান নেবে এবং সেটা দেখিয়ে চলে যাবে।
আলোচনায় ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা ব্যবসা সহজীকরণের বিষয়ে বিভিন্ন দাবি জানান। এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এওএবি) জেট ফুয়েলের ওপর আমদানি শুল্ক ও মূসক অব্যাহতি এবং উড়োজাহাজের বিভিন্ন যন্ত্রপাতির ওপর কর হ্রাসের প্রস্তাব করেছে। স্থানীয় সোলার প্যানেল উৎপাদকদের ৫০০ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে সোলার মডিউল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ। মিষ্টি বিক্রিতে মূসক ১০ শতাংশ কমিয়ে ৩ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ সুইটস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন।
যাত্রীবাহী নৌযানের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষের উপর মূসক অব্যাহতির প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়ে অ্যাসোসিয়েশন। বাংলাদেশ ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রান্সফরমার অ্যান্ড সুইচগিয়ার রফতানি কার্যাদেশে ৬৫ শতাংশ কাঁচামালের ওপর সম্পূর্ণ শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেয়।
সমাপনী বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান উপস্থিত ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের নিশ্চিত করেন, এনবিআর চেষ্টা করবে, যেখানে যেখানে সহজ করা দরকার, সেটা তারা করবে। তিনি বলেন, আমাদের এবারের বাজেটের মূল টার্গেট হচ্ছে আমরা ট্রেন্ডকে ফ্যাসিলেটেড করব। লুপ হোলগুলো বন্ধ করব আর বৈষম্য যত পারি কমাব।
সম্পাদক ও প্রকাশক : জি এম আলমগীর হোসেন মিঠু