দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি (আল আমিন) : গরিবের সবচেয়ে বড় সম্পদ ইজ্জত,সেই ইজ্জত যদি কেই প্রতারণার ফাঁদে পড়ে হারিয়ে ফেলে,তখন আর পথ খুজে পায়না সে নারী, লোক লজ্জায় সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন আর পদে পদে অপমান সইতে না পেরে মানুষ বেছেঁ নেয় ভিন্ন পথ।
এমই এক অমানবিক ঘটনার শিকার হয়েছেন এক ১০ ম শ্রেনীর স্কুল ছাত্রী ও তার দিনমজুর পরিবার।
বিয়ের দাবী জানাতে গিয়ে প্রেমিকের পরিবারের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন প্রেমিকা।
বৃহস্পতিবার সন্ধা ৭ টায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার বেতদিঘী ইউনিয়নের মাদিলাহাট বাজারের সাইফুল ইসলামের ছেলে প্রেমিক আল আমিনের বাড়ীতে বিয়ের দাবী নিয়ে আসলে এই নির্যাতনের শিকার হয় ওই স্কুল ছাত্রী। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, প্রেমিক আল আমিন বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ওই স্কুল ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে, দির্ঘ পাঁচ বছর যাবৎ শারিরিক সম্পর্ক করে আসছে। প্রেমিকা বার বার বিয়ের কথা বললে, বিয়েতে অস্বীকার করে আসছে প্রেমিক আলামিন। এরই মাঝে প্রেমিকা জানতে পারে তার প্রেমিক অন্যত্র বিবাহ করছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধায় ওই প্রেমিকের বাড়ীতে বিয়ের দাবী জানাতে গেলে প্রেমিকের পরিবারের হাতে লাঞ্চিত সহ মারপিটের শিকার হয় ওই প্রেমিকা। খবর পেয়ে পুুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। এ ঘটনায় ওই স্কুল ছাত্রী মা বাদি হয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই ফুলবাড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিছুদিন আগেও এ ঘটনার জের ধরে ওই প্রেমিক আলামিন এর বিরুদ্ধে ভুক্তভুগি আরও একটি মামলা করেছেন,যা চলমান রয়েছে। এখন টাকা পয়সা মানসম্মান ইজ্জত সব হারিয়ে বিচারের আশায় কর্তাব্যাক্তিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে ওই অসহায় স্কুল ছাত্রী ও তার দিনমজুর পিতা-মাতা।
স্থানীয়রা জানায়,এর আগে গত ১৭ই জানুয়ারী ওই প্রেমিক আল আমিনের বড় ভাই রুবেল ওই এলাকার একটি ভিন্ন ধর্মের মেয়েকে জোর পূর্বক অপহরন করে নিয়ে গিয়েছিল,এ ঘটনায় একটি অপহরণ মামলা হয়। সেই মামলাও এখন চলমান রয়েছে। এখন তার ছোট ভাই আর এক জনের সাথে প্রতারনা করছে।
প্রতারনার শিকার ওই ছাত্রী বলেন,আল আমিন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দির্ঘ পাঁচ বছর ধরে স্বামী স্ত্রীর ন্যায় শারিরিক সম্পর্ক করে আসছে। বিয়ের অগ্রিম যৌতুক বাবদ তার পরিবারের কাছে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বারবার বিয়েরকথা বললে অস্বীকার করে। এখন গোপনে অন্যত্র বিয়ে করার চেষ্টা করছে। লজ্জায় বাড়ী থেকে বের হতে পারিনা। আমি গরিব মানুষ বলে আমার ইজ্জতের দাম নেই, যদি সুবিচার না পাই আমার আত্যহত্যা করা ছাড়া কিছুই করার থাকবেনা।
জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রেমিক আলামিন বলেন, ওই মেয়ের সাথে শুধু মোবাইলে কথা বলতাম। একদিন পরিবারের সবাই মিলে বেড়াতে গিয়েছিলাম,এর বাইরে কিছু হয়নি। তার সাথে অমি কোন শারিরিক সম্পর্ক করিনি। আমাকে ফাসানোর চেষ্টা করছে।
সরেজমিনে ওই স্কুল ছাত্রীর বাড়ীতে গেলে দেখা যায়, ছনের খড় দিয়ে ঘেরা ছোট্র টিনের ছাপড়ার দুটি ঘর। সেটিও হেলে পড়েছে, কখন যেন ভেঙ্গে পড়ে। যেখানে তাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায়, এর উপর এনজিওর কিস্তির চাপ, তাদের শোবার ঘরটিও ভাল করতে পারছেনা, বৃষ্টির পানি চুয়ে চুয়ে পড়ছে। ঘরের মেজেতে ঢেউ খেলছে বর্ষার পানি, এসময় ওই স্কুল ছাত্রী বলছে ঘর লাগবেনা স্যার, আমার ইজ্জত বাঁচান।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন,ওই প্রেমিক আল আমিন এর বিরুদ্ধে ইতোপুর্বেও একটি মামলা করেছে ওই ভুক্তভুগি। বৃহস্পতিবার আবারও একটি অভিযোগ করেছেন তার মা। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।