নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি (মাহবুব আলম রানা) : চাকরি না পেয়ে মনের ক্ষোভে নিজের সব একাডেমিক সার্টিফিকেট পুড়িয়েছেন প্রতিবন্ধী যুবক আল ইমরান হোসেন (২৬)। দীর্ঘ ৫ বছর চাকরির জন্য ঘুরে ঘুরে চাকরি না পেয়ে শেষে তার সার্টিফিকেট পুড়িয়ে দেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার (১ জুন) সার্টিফিকেট পোড়ানোর ছবি তার নিজের ফেইসবুক আইডিতে শেয়ার করেন।
সার্টিফিকেট পোড়ানো প্রতিবন্ধী যুবক আল- ইমরান হোসেন নওগাঁ সদর থানার দুবলহাটি ইউনিয়নের বনগাঁ গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেনের ছেলে।
ক্যাপশনে তিনি লেখেন, “এই সার্টিফিকেট দিয়ে কি আমি পুজা করবো”। এরপর তিনি লেখেন, আমি আল- ইমরান হোসেন। গ্রাম বনগাঁ পোস্ট দুবলহাটি। থানা জেলা নওগাঁ। ২০১৭ সালে গ্রাজুয়েশন শেষ করে এমা কোনো অফিস নাই যেখানে চাকরির জন্য আবেদন করিনি। অধিকাংশ জায়গায় টিকলেও তাদের চা খাওয়ানোর টাকা আমার পরিবারের না থাকায় প্রতিবার রিজেক্ট করে বের করে দেওয়া হয়েছে। আমি গরীব ঘরের সন্তান, আমার মামা, খালু নাই এজন্য কোথাও চাকরি হয়নি। পরিবারে কর্মক্ষম কেউ নাই। আমি ও শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী। তার পর ও বার বার বার ভাইভা পর্যন্ত টেকার পরও চাকরি দেওয়া হয়নি। ১৬ বছর শুধু মাত্র সার্টিফিকেট এর জন্য গাধার মতো পড়ে কি উপকার হলো আমার। ঘরে অসুস্থ মা আমি নিজেও অসুস্থ। যেই সার্টিফিকেট পেটের খাবারের জন্য একটা চাকরি দিতে পারে না সেই সার্টিফিকেট কোট ফাইলে রেখে কি আমি পূজা করবো নাকি। তাই আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিলাম।
আল ইমরান হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ২০১১ সালে এসএসসি, ২০১৩ সালে এইচএসসি ও ২০১৭ সালে স্নাতক পাস করি। দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর বিভিন্ন দপ্তরে চাকরির জন্য পরীক্ষা দিয়ে কোথাও কোথাও মেধা তালিকায় প্রথম হই। এরপরও আমার কোন চাকরি হয়নি। সেখানে ১৫ লক্ষ টাকার চা/বিরিয়ানি খেতে চায়। আমি একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী মানুষ (মেরুদন্ডের হাড় বাঁকা), বাবা একজন কাঠমিস্ত্রী। তিনি অনেক কষ্ট করে আমাকে লেখাপড়া করিয়েছেন এবং আমার ছোট ভাইকে লেখাপড়া করাচ্ছেন। এতো টাকা দেওয়ার মত সামর্থ্য আমার বাবার নেই তাই আমার চাকরি হয়নি। সে জন্য সার্টিফিকেট সেগুলো পুরিয়ে ফেলেছি।