নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি : নওগাঁর সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের তুলশীগঙ্গা নদীর বেড়িবাঁধের পাশ থেকে গত মঙ্গলবার (২৮নভেম্বর) সকালে তাসফিয়া তাবাসসুম রিংকু (১৮) নামে এক কলেজ ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছিলো পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত রিংকুর মা শাহিনা বেগমকে বাদী হয়ে নাঈম ও আলাউদ্দিন নামের ২জনকে আসামী করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর এজাহার নামীয় দুইজনকে আটক করে শনিবার বিকেলে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে থানা পুলিশ।
নিহত রিংকু আক্তার জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের রাইকালী গ্রামের মৃত রাজ্জাকের মেয়ে ও রাইকালী কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। আটককৃতরা হলেন, জয়পুরহাট জেলা আক্কেলপুর উপজেলার মাটিয়াকুরি গ্রামের আলাউদ্দীনের ছেলে নাঈম ও সহযোগী হিসেবে একই গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজ মন্ডলের ছেলে আলাউদ্দীন।
থানা সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত-রাতে রাজশাহীর পবা থানা ও জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে অভিযান চালিয়ে বাবা ও ছেলে দুই জনকে আটক করা হয়েছে। আটকের পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, নিহত রিংকু ও নাঈমের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক আছে। এই সম্পর্কে পরিবার বাধা হয়ে দাঁড়ালে গত সোমবার (২৭ নভেম্বর) সকালে তারা কোর্ট ম্যারেজ করার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে একটি অটোরিক্সায় করে রাজশাহী কোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথে দুজনের মধ্যে নওগাঁ কোর্টে অথবা রাজশাহী কোর্টে যাওয়া নিয়ে তর্কবিতর্ক আর ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে সদর উপজেলার চকগৌড়ি মেইন রাস্তায় অটোরিক্সা থেকে রিংকু পড়ে যায়। সেখানে সে মাথা ও হাত পায়ে গুরুতর যখম হলে তাকে বাচানোর জন্য প্রেমিক নাঈম দ্রুত মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা খারাপ দেখে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে রিংকুকে প্রেরণ করেন। তখন নাঈম ভয় পেয়ে তার বাবা আলাউদ্দীনের সাথে আলোচনা করলে তার বাবা রাজশাহী ইসলামি হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেয়। সেখান থেকে দ্রুত এ্যাম্বুলেন্স যোগে তাকে রাজশাহী ইসলামি হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। পরে নাঈম ও তার বাবা ভয় পেয়ে রিংকুর লাশটি রাতের আধারে তিলকপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের তুলশীগঙ্গা নদীর বেড়িবাঁধের পাশে ফেলে পালিয়ে যায়।
সত্যতা নিশ্চিত করে নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ফয়সাল বিন আহসান বলেন, এ ঘটনায় দুই জায়গায় অভিযান চালিয়ে বাবা ও ছেলেকে আটক করা হয়েছে। নাঈম ও রিংকুর মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। তারা বিয়ের জন্য রাজশাহী যাওয়ার পথে রাস্তায় মেয়েটি পড়ে যায় এবং পরে তার মৃত্যু হয়। এঘটনায় একটি কলেজ ব্যাগ ও একটি ভ্যান জব্দ করে হত্যা মামলায় তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।