মানবচিত্র ডেস্ক : দেশের অর্থনীতি বড় ধরনের সংকেটের দিকে এগোচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, উন্নয়নের গালগল্প করে দেশকে ঋণের জালে জর্জরিত করে দেউলিয়া করতে যাচ্ছে সরকার। এখন প্রায় ২০ লাখ কোটি টাকা ঋণের বোঝা বইছে দেশ।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের অর্থনীতির ভয়ংকর বিপর্যয় হয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ালেও দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। শ্রীলঙ্কা এক বছরের মধ্যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে নেতৃত্ব ও সুশাসনের জন্য। অথচ দেশে মূল্যস্ফীতি, রেমিট্যান্স প্রবাহ শোচনীয়।
তিনি বলেন, উন্নয়নের নামে আওয়ামী লীগ সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতি, আর ঋণ করে ঘি খাওয়ার পরিণতিতে দেশ এখন ঋণের চাকায় পিষ্ট। বেশ কিছুকাল থেকেই তারল্য সংকটে পড়ে দেশের অনেক ব্যাংক ধার করে চলছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে পারে না, হতদরিদ্র মানুষ পেট ভরে দুবেলা খেতে পারে না, কিন্তু আওয়ামী স্বৈরশাসকেরা উন্নয়নের গালগল্প করে দেশটিকে ঋণের জালে জর্জরিত করে দেউলিয়ার পথে ঠেলে দিয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংক খাতে অতিরিক্ত তারল্য কমে ৩ হাজার ৯০৯ কোটি টাকায় নেমেছে। এক বছর আগেও যা ২ লাখ ৩ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা ছিল। বিশেষ করে শরিয়াভিত্তিক পরিচালিত পাঁচটি ব্যাংক নিয়মিত সিআরআর রাখতে ব্যর্থ হয়ে জরিমানায় পড়েছে। এ সময়ে নিরাপত্তার কথা ভেবে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে টাকা তুলে হাতে রাখছেন অনেকে। কিন্তু তারল্য সংকটে অনেক ব্যাংক আমানতকারির নিজস্ব আমানতের এমনকি ১ লাখ টাকার চেকও অনার করতে পারছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। অপরদিকে তারল্য সংকটের কারণে ব্যাংকিং সেক্টর থেকে লোন দেওয়া সংকুচিত হয়ে পড়েছে। রাষ্ট্রের অন্য সকল খাতের মতো ব্যাংক খাতের প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসনকেও ধ্বংস করেছে তারা।
তিনি বলেন, বর্তমান দুর্নীতিবাজ সরকারের সময় কানাডার বেগমপাড়া, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম, দুবাই, আমেরিকার বিভিন্ন স্টেট ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং বেলারুশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ও সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট অনেকে জমি ও বাড়িঘর ক্রয় করে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে। এদিকে দেশের মানুষ আরও গরিব হচ্ছে।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা আরও বলেন, সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব, ভ্রান্তনীতি গ্রহণ, নীতির সমন্বয়হীনতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব এবং সর্বোপরি লাগামহীন দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশ সংকট থেকে বের হতে পারছে না। তাই, দেশবাসীর কাছে আহ্বান-আসুন বাংলাদেশে একটি সত্যিকার জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চলমান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। আর আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের অবসান ঘটিয়ে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত করি।