ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি (মোঃ আইনুল হক) : ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার ৮ নং দৌলতপুর ইউনিয়ন এবং ১০নং জাবরহাট ইউনিয়ন দিয়ে বয়ে যাওয়া টাঙ্গন নদীর উপরে আতাই ঘাটে দীর্ঘদিনেও কোন সেতু নির্মাণ না করায় এতে বিপাকে পড়েছে দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলা এবং পীরগঞ্জ উপজেলার সহ এখানকার দুই উপজেলার মানুষ।
একটি সেতুর অভাবে দুই উপজেলার প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছেন। আবার অতিরিক্ত পানি বাড়লে নৌকা দিয়ে পার হতে হয় এই দুই উপজেলার মানুষকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঐ এলাকার মংগল মর্মু হাওয়া মর্মুর উদ্যোগে নির্মিত প্রায় এক হাজার ফুট লম্বা ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছে কোমলমতি শিক্ষার্থী, কৃষক-কৃষানী, চাকুরীজীবি, ব্যবসায়ীসহ দু’উপজেলার প্রায় ৭০ হাজার মানুষ।
আসা যাওয়ার জন্য এ সাঁকোটিই একমাত্র ভরসা। বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে কৃষি পন্য পরিবহন ও অন্যান্য ভারী যানবাহন চলাচলের উপযোগী না হওয়ায় এই এলাকার কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য সহজভাবে বাজার জাত করতে পারছে না।
অপরদিকে দুুর্ভোগ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত এই এলাকার মানুষ। বাঁশের সাঁকোর উগ্যোক্তা মংগল মর্মু ও হাওয়া মর্মু সহ এলাকার কয়েকজন স্থানীয় মাতব্বর বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপারের জন্য এই সাঁকোটি তৈরি করেন।
তাছাড়া এই ঘাটের পূর্বপাশে প্রতিবছরই সনাতন ধর্মাম্বলিদের ধর্মীয় সভা সহ তাদের স্নান উৎসবের আয়োজন করা হয়।
দুই উপজেলার হাজার হাজার হিন্দুধর্মাবলম্বী ভক্তরা উৎসব পালন করতে আসেন সেখানে। কিন্তু পীরগঞ্জের এপারে বাঁশের সাঁকোর ব্যবস্থা থাকলেও ওপারে বোচাগঞ্জ উপজেলায় বাঁশের সাঁকোর ব্যবস্থা না থাকায় হাটু পানি ভেঙে যাতায়াত করতে হয় ওপারের বোচাগঞ্জ উপজেলায়।
ফলে ঐসব এলাকার লোকজনের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। এলাকাবাসীর দাবি একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণের।
সেতু নির্মাণ হলে দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তি কমবে।
এব্যাপারে বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিউজ প্রকাশিত হওয়ার পর বরাবরই ভিজিটে আসেন বিভাগ জেলা এবং উপজেলার অনেক অফিসার কিন্তুু বার বার ফাইল পড়ে থাকে মন্ত্রণালয়। এতে বারবার যোগাযোগ করা হলেও অবশেষে ঢাকা থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর মাননীয় প্রকল্প পরিচালক মো: এবাদত আলী পরিদর্শনে এসে বলেন, একটি সেতুর জন্য এতোগুলা লোকজন এখানে জমায়েত হয়েছেন সত্যিই আমি গর্বিত। আমাকে আপনারা যে সম্মান দেখালেন আমি আপনাদের এই ঋণ শোধ করতে পারবোনা।
তিনি আরও বলেন, আমি চেষ্টা করবো আপনাদের এই এলাকায় একটি সেতু নির্মাণ করে দেওয়ার।
এ সময় অন্যানদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, পীরগঞ্জ উপজেলার ৮ নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সনাতন চন্দ্র রায়, ৯ নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান, ১০ নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জিয়া, বোচাগঞ্জ উপজেলার ৬ নং রনগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান ইউপি চেয়ারম্যান নিমাই রায়।
টাঙ্গুয়ার নদী শ্রী শ্রী গঙ্গা সিনান মন্দিরের ভক্তবৃন্দ, হিন্দু ধর্মের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বোচাগঞ্জ পীরগঞ্জ উপজেলার সাদা মহল ও জাবরহাট ইউনিয়ন পরিষদ বোচাগঞ্জ ও পীরগঞ্জ উপজেলার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাঁওতাল সম্প্রদায়ের ব্যক্তিবর্গ, তিন ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ জনগণ সহ অনেক নেতৃবৃন্দ।
এই বিষয়ে ১০ নং জাবরহাট ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জিয়া বলেন, ভরা বর্ষা মৌসুমে নৌকার ওপর দিয়ে যাতায়াত করে দুই উপজেলার মানুষ। টাংগন নদীর আতাই ঘাটে সরকারি অর্থায়নে একটি সেতু নির্মাণ করা অতিব জরুরি প্রয়োজন ব্রিজটি নির্মাণ করা হলে দুই উপজেলার মানুষের যাতায়াতে সুবিধার পাশাপাশি এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে।
এ সময় দুই উপজেলার কয়েক হাজার লোকজন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ উপজেলা সহঃ প্রকৌশলী মাসুদ রানা বলেন, আতাই ঘাটের এই স্হানে সেতু নির্মাণের বিষয়টি খুবই জরুরি এবং যুগোপোযোগী সেতু নির্মাণের প্রয়োজন বলে আমি মনে করি, আমরা আমাদের উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ব্যাবস্হা গ্রহন করবো।