অনলাইন ডেস্ক : টাঙ্গাইলে একটি নৈশ কোচে তিন ঘণ্টাব্যাপী গণডাকাতির পর যাত্রীদের বেঁধে ও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এক নারীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বুধবার রাতে টাঙ্গাইলের মধুপুর থানায় এই মামলা দায়ের হয়েছে। পরে মেয়েটিকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
মধুপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন জানান, মঙ্গলবার রাতে কুষ্টিয়া থেকে ঈগল পরিবহনের এই বাস ৩০-৩৫ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে মঙ্গলবার ছেড়ে আসে। যাত্রীবেশে কুষ্টিয়া থেকে ওই কোচে উঠে ডাকাত দল গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী যাত্রীদের মারধর ও তাদের সাথে থাকা জিনিসপত্র লুট করে। পরে বাসে থাকা এক নারীকে ধর্ষণ করে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে মধুপুরের রক্তিপাড়া জামে মসজিদের উল্টোপাশে মজিবরের বাড়ির সামনের বালির ডিবিতে বাস উঠিয়ে দিয়ে ডাকাত দল পালিয়ে যায়।
নাটোরের বড়াইগ্রামের বাসিন্দা এক যাত্রী জানান, তিনি বাসের নিয়মিত যাত্রী। বাসের সুপার ভাইজার রাব্বি ও হেলপার দুলাল তার পূর্বপরিচিত। কিন্তু বাসের এবারের চালক নতুন। তিনি বড়াইগ্রামের তরমুজ চত্বর থেকে আমড়া, কাঁঠাল ও তালসহ বিভিন্ন ফল ঢাকার গুলশানে নিয়ে যেতে বাসে উঠেন। বাসটি সিরাজগঞ্জের কাছাকাছি দিবারাত্রি হোটেলে নৈশভোজের জন্য যাত্রা বিরতি দেয়।
পরে রাত দেড়টার দিকে আবার যাত্রা শুরু করে। পথে কাঁধে ব্যাগ বহনকরা ১০-১২ জন তরুণ যাত্রী ওঠেন।
ওই যাত্রী বলেন, তখন সবাই প্রায় ঘুমে। বাসটি বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর যাত্রীবেশে থাকা ওই তরুণ দল অস্ত্রের মুখে একে একে ঘুমন্ত যাত্রীদের সবাইকে বেঁধে ফেলে। প্রত্যেক যাত্রীর চোখ ও মুখ বেঁধে চালককেও জিম্মি করে বাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়।
পাঁচ মিনিটের মধ্যে সব যাত্রীর কাছ থেকে মোবাইল, টাকা, গহনা নেয়। তারপর এক নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করে। পরে বাস বিভিন্ন রাস্তা ঘুরিয়ে তিন ঘণ্টার মতো নিয়ন্ত্রণে রাখে। শেষে পথ পরিবর্তন করে টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ সড়কের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে বালির ডিবিতে ঠেকিয়ে ডাকাত দল নেমে যায়। সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের উদ্ধার করে বলে তিনি জানান।
পুলিশ জানায়, সকালে সংবাদ পেয়ে মধুপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে যাত্রীদের উদ্ধার করে করে থানায় নিয়ে আসে। প্রথমে এটিকে দুর্ঘটনা মনে করা হয়েছিল। পরে বিষয়টি পরিষ্কার হয়।