খুলনা বিশেষ প্রতিনিধি (সোহাগ কাজি) : করোনা পরীক্ষার ফির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে খুলনা সিভিল সার্জনকে ওএসডি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সহকারি সচিব মো. আলমগীর কবীর স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদকে ওএসডি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে ডা. সুজাত আহমেদকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ওএসডি এবং আইএইচটির অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়নের জন্য তার চাকরি স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগে ন্যস্ত করার আদেশ দেওয়া হয়।
একই প্রজ্ঞাপনে সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. মো. সবিজুর রহমানকে খুলনার নতুন সিভিল সার্জন হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে করোনা পরীক্ষার ফির দুই কোটি ৬১ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় ওই সিভিল সার্জনসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক।
খুলনা জেনারেল হাসপাতালে বিদেশগামী যাত্রী ও সাধারণ কোভিড-১৯ রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ল্যাবে পাঠানো হত।
তবে অভিযোগ ছিল ল্যাবে যে পরিমাণ নমুনা পাঠানো হত, তার থেকে রোগীর সংখ্যা কম দেখিয়ে টেস্টের ফির টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হত।
২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত মোট ফি আদায় করা হয়েছিল চার কোটি ২৯ লাখ ৯১ হাজার ১০০ টাকা। কিন্তু সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছিল এক কোটি ৬৮ লাখ ৪৬ হাজার ৭০০ টাকা। বাকি দুই কোটি ৬১ লাখ ৪৪ হাজার ৪০০ টাকা আত্মসাৎ করা হয়।
এ ঘটনায় দুদকের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক খন্দকার কামরুজ্জামান বাদী হয়ে ২০২১ সালের ১৮ নভেম্বর মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলার তদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন কামরুজ্জামান।
মামলার আসামিরা হলেন, খুলনা সদর হাসপাতালের সাবেক মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) প্রকাশ কুমার দাস, মো. রওশন আলী, ক্যাশিয়ার তপতী সরকার, সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা এস এম মুরাদ হোসেন, সাবেক সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ আলী এবং বর্তমান সিভিল সার্জন সুজাত আহমেদ।
খন্দকার কামরুজ্জামান জানান, ২০২১ সালের ১৮ নভেম্বর কোভিড-১৯ পরীক্ষার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে খুলনা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সাবেক মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) প্রকাশ কুমার দাসকে আসামি করে মামলা করা হয়।
প্রথমদিকে একজন আসামি থাকলেও পরে তদন্তে আরও অনেকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সিভিল সার্জন খুলনা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল (সদর) হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক। মামলার অভিযোগপত্রে সাবেক সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ আলী ও বর্তমান সিভিল সার্জন সুজাত আহমেদের নাম রয়েছে।
“এর মধ্যে নিয়াজ মোহাম্মদ আলী পাঁচ নম্বর ও সুজাত আহমেদ ছয় নম্বর আসামি। তদন্তে ওই টাকা আত্মসাতের ঘটনার সঙ্গে তাদের দুজনের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে দুদক।”