1. manobchitra@gmail.com : news :
  2. manobchitra24@gmail.com : News Bd : News Bd
October 6, 2024, 6:51 am
শিরোনাম
সাতক্ষীরায় ডিবি পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানে ৫০ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার পূর্বক আটক- ১ সাতক্ষীরা সদর ও তালা থানাধীন বিভিন্ন পূজা মন্দির পরিদর্শন করেন এসপি মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ডিবি কার্যালয়ে থাকবে না আর কোনো আয়নাঘর ও ভাতের হোটেল: ডিবি প্রধান রেজাউল করিম মল্লিক অলসতা করবো শেষ, বেকার মুক্ত বাংলাদশ: স্লোগানে আত্মপ্রকাশ করলো মেঘনা উদ্যোক্তা উন্নয়ন ফাউন্ডেশন সাতক্ষীরার তলুইগাছা সীমান্ত থেকে অস্ত্রসহ ৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে বিজিবি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নির্ভয়ে পূজা মণ্ডপে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সেনাপ্রধান ডুয়েটে আইপিই বিভাগের অ্যালামনাইদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত খালেদা জিয়ার বাসার সামনে বালুর ট্রাক রাখার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ১১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা সাতক্ষীরায় ডিবি পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানে ১১২ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধারসহ আটক- ২

কনস্টেবল থেকে এএসপির মিথ্যা গল্প হাকিমের

  • আপডেট সময় Thursday, April 7, 2022

অনলাইন ডেস্ক : কনস্টেবল থেকে পুলিশের এএসপি (সহকারী পুলিশ সুপার)। চাকরির পেছনে হন্যে হয়ে ছুটে বেড়ানো মানুষের কাছে নিঃসন্দেহে তা আশা জাগানিয়া সংবাদ।

৪০তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর অবাক করা এমন কৃতির দাবি করেন আবদুল হাকিম। কনস্টেবল থেকে পুলিশ ক্যাডারে তার এ সুপারিশপ্রাপ্তি
সারাদেশেই আলোড়ন তোলে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধন্য ধন্য রব পড়ে যায়। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সবাই তাকে শুভেচ্ছা জানান।

দেশের প্রথম শ্রেণির বেশিরভাগ মিডিয়ায় ফলাও করে প্রকাশিত হয় হাকিমের এমন অভূতপূর্ব সাফল্য। তবে এ বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে মেলে চাঞ্চল্যকর তথ্য। হাকিমের দেওয়া তথ্যে রয়েছে বিস্তর গরমিল। আদতে বিসিএসে উত্তীর্ণ তো দূরের কথা, পরীক্ষাই দেননি আবদুল হাকিম।

পুলিশ কনস্টেবল আবদুল হাকিম দাবি করেছিলেন, ৪০তম বিসিএসে তিনি পুলিশ ক্যাডারে ৬৭তম স্থান অর্জন করেছেন। অথচ বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) তালিকায় সেই স্থান লাভ করা ব্যক্তির রোল নম্বর ১৬০০৪৩৯১, যা কিনা সিলেট অঞ্চল থেকে আবেদন করা এক পরীক্ষার্থীর। তার নাম সঞ্জীব দেব। আর আবদুল হাকিম নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের সায়দাবাদ গ্রামের বাসিন্দা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সঞ্জীব দেব শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন।

প্রথম বিসিএসেই পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন এ মেধাবী। যোগাযোগ করা হলে সঞ্জীব দেব বলেন, ‘আমি পুলিশ ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়েছি। আমার পজিশন ৬৭তম।’ তার দেখানো প্রবেশপত্রেও এর সত্যতা মেলে। যদিও কনস্টেবল আবদুল হাকিম দাবি করেন, তিনিই ৪০তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলে পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। মেধাতালিকায় ৬৭তম হয়েছেন তিনি।

আবদুল হাকিম বলেন, ‘২০১০ সালে সায়দাবাদ উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক সম্পন্ন করেছি। এর পর রায়পুরা কলেজ থেকে ২০১২ সালে সম্পন্ন করি উচ্চমাধ্যমিক। ২০১২-১৩ সেশনে ভর্তি হই নরসিংদী সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে। এর কিছুদিন পর পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি হয়।’ ২০১৩ সালে পুলিশে যোগদান করার পর প্রথমে গাজীপুরে শিল্প পুলিশে পোস্টিং হয় হাকিমের। কিন্তু ২০১৫ সালে বদলি হয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) আসেন, পোস্টিং হয় পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) বিভাগে। সেখানে থাকা অবস্থায়ই নরসিংদী সরকারি কলেজ থেকে ২০১৬ সালে অনার্স শেষ করেন। আবদুল হাকিম বলেন, ‘দুই বছরের ব্যবধানে ২০১৮ সালে পাবলিক সার্ভিস কমিশনে আবেদন করি। প্রিলিমিনারিতে কৃতকার্য হওয়ার পর পর্যায়ক্রমে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিই। চলতি বছরের ৩০ মার্চ ৪০তম বিসিএসের ফলে পুলিশ ক্যাডারের মেধাতালিকায় ৬৭তম হিসেবে জায়গা করে নিই।’ তিনি দাবি করেন, ‘গুলশানে পোস্টিং থাকা অবস্থাতেই ভাইভা দেই। গত বছরের ২৩ মার্চ আমার ভাইভা অনুষ্ঠিত হয়। তবে এর কয়েকদিন পরই ৩০ মার্চ থেকে করোনার কারণে ভাইভা পরীক্ষা স্থগিত করে পিএসসি।’

সূত্র অবশ্য বলছে, ৬৭তম পজিশনে থাকা রোল নম্বরের পরীক্ষার্থীর ভাইভা হয়েছে গেল ফেব্রুয়ারি মাসে। আর পিএসসির তালিকায় নাম থাকা সঞ্জীব দেবও জানালেন তিনি ওই সময়েই ভাইভা দিয়েছেন। ২০২০ সালের ৪ থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় ৪০তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা। আবদুল হাকিমের দাবি অনুযায়ী, তিনি ওই পরীক্ষায় অংশ নেন। কিন্তু তার ফেসবুক প্রোফাইল ঘেঁটে দেখা গেছে উল্টো চিত্র। ১ থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত খাগড়াছড়ি, কক্সবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ানোর ছবি আপলোড দেন তিনি। যদিও বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হওয়ার পরই এসব ছবি ফেসবুক থেকে ডিলেট করে দিয়েছেন।

শুধু তাই নয়, নরসিংদী সরকারি কলেজ থেকে ২০১৬ সালে স্নাতক পাস করার কথা বললেও ওই বছরের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে উত্তীর্ণদের তালিকায় আবদুল হাকিমের নাম নেই। এমনকি ২০১২-১৩ শেসনের শিক্ষার্থীদের তালিকায়ও তার নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি। বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলছেন, ২০১২-১৩ শেসনে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা অনার্স শেষ করেছেন ২০১৭ সালে। ওই বছর রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক পাশ করা তিন শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা প্রত্যেকেই জানান, আবদুল হাকিম নামে কেউ তাদের সহপাঠী ছিলেন না। তবে সিনিয়র বা জুনিয়র কেউ এ নামে থাকতে পারেন।

জানতে চাইলে নরসিংদী সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘শুনেছি আবদুল হাকিম নামে আমাদের এক শিক্ষার্থী পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছে।’ তিনি কোন ব্যাচের জানতে চাইলে ওই শিক্ষক বলেন, ‘২০১৩-১৪ সালের হতে পারে। তবে খাতা না দেখে শিওর (সঠিক) বলা যাবে না।’

এ বিষয়ে জানতে আবদুল হাকিমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় গতকাল বুধবার। অনেকবার ফোন ও মেসেজ করলেও তিনি সাড়া দেননি। সর্বশেষ গতকাল রাত ৯টার দিকেও পুলিশের এ সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। মেসেজ পাঠানো হয় তার মোবাইল নম্বরে। জানতে চাওয়া হয় ‘পিএসসির তালিকা অনুযায়ী আপনি পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হননি। ৬৭তম হয়েছেন দাবি করলেও ওই পজিশন সঞ্জীব দেব নামের একজনের। এ ছাড়া নরসিংদী সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০১৬ সালে পাস করা তালিকায়ও আপনার নাম নেই। অথচ আমার কাছে দাবি করেছিলেন আপনি ওই কলেজ থেকে ২০১৬ সালে স্নাতক পাস করেছেন। তা ছাড়া বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সময় আপনি যে ঢাকার বাইরে ছিলেন, সে তথ্য প্রমাণও রয়েছে। আর ভাইভা অনুষ্ঠিত হয়েছে ফেব্রুয়ারিতে, কিন্তু আপনি দাবি করেছেন, মার্চের ২৩ তারিখে ভাইভা দিয়েছেন। এ বিষয়ে আপনার বিস্তারিত বক্তব্য দরকার।’ ফোন ধরতে অনুরোধ করে মেসেজ দিলেও আবদুল হাকিম বারবার ফোন কেটে দেন। রাত ৯টার পর প্রতিবেদকের নম্বরটি তার মোবাইলের ব্লক লিস্টে রেখে দেন।

সুত্রঃ আমাদের সময়

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2021 ManobChitra
Theme Customized By BreakingNews