কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি (আবদুর রহিম) : সাগরের উচ্চ জোয়ারের আঘাতে কক্সবাজার সৈকতে তীব্র ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে ঢেউয়ের আঘাতে ভেঙ্গে গেছে ট্যুরিস্ট পুলিশের হেল্প ডেস্ক বক্স। একই সঙ্গে ঝুঁকিতে পড়েছে সৈকতপাড়ের ৫ শতাধিক দোকান। আর ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেছে জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড। তারা বলছেন, ভাঙ্গন রোধে কাজ শুরু হয়েছে।
সাগর উত্তাল, উচ্চ জোয়ারে একের পর এক ঢেউ আঘাত করছে উপকূলের বালিয়াড়িতে। একই সঙ্গে ঢেউয়ের আঘাতে উপড়ে গেলো ট্যুরিস্ট পুলিশের বক্স। আর ভেঙ্গে যাচ্ছে বালিয়াড়ি এবং তলিয়ে যাচ্ছে জিও ব্যাগও।
কক্সবাজারে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত অব্যাহত রয়েছে। যার প্রভাবে জোয়ার আসলেই ঢেউয়ের আঘাতে তছনছ হচ্ছে সৈকতের লাবনী পয়েন্ট। একই সঙ্গে উচ্চ জোয়ার আসলেই আতংকের থাকেন সৈকতপাড়ের দোকানিরা।
লাইফ গার্ড কর্মী রশিদ বলেন, বুধবারের চেয়ে বৃহস্পতিবার ভাঙন তীব্র হয়েছে। উচ্চ জোয়ারের সময় বৃহস্পতিবার সকালে ভেঙ্গে যায় ট্যুরিস্ট পুলিশের বক্সটি। একই সঙ্গে পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে জিও ব্যাগও। এবছরই সবচেয়ে বেশি ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে।
লাবনী পয়েন্টের বিচ মার্কেটের ব্যবসায়ী রহিম উদ্দিন বলেন, আমাদের বিচ মার্কেটের ২ শতাধিকের বেশি আচার, শুটকি ও বার্মিজ পণ্যের দোকান রয়েছে। এখন সবগুলো দোকান ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। যেকোন মুহুর্তে ঢেউয়ের আঘাত আসবে এই ভয়ে রয়েছি।
প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে সাগরের আগ্রাসন বাড়ছে। তবে এবছর এর মাত্রা আরও বেড়েছে। তাই সৈকতের সৌন্দর্য রক্ষা করে টেকসই বাঁধ দেয়ার দাবি জানালেন পরিবেশবাদিরা।
বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দিপু বলেন, ভাঙ্গনে তীব্রতা প্রতিবছরই বাড়ছে। কিন্তু সেভাবে সৈকতের পাড় বা ঝাউবিথী রক্ষা করা যাচ্ছে না। তাই দ্রুত সৈকতের সৌন্দর্য রক্ষা করে টেকসই বাঁধ দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে সৈকত ভাঙন পরিদর্শনে আসেন জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, তীব্র ভাঙ্গন ঠেকাতে প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে।
কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ বলেন, প্রাথমিকভাবে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে ১০০ মিটার জিওব্যাগ দিয়ে বাঁধ দেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে পরিকল্পনা করে টেকসই বাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাহিদ ইকবাল বলেন, এবছর ভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়েছে। তাই প্রাথমিকভাবে কিছু কাজ করা হচ্ছে। আর সবার সঙ্গে সমন্বয় করে কি করা যেতে পারে তা সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
গেলো ২৪ ঘন্টায় কক্সবাজারে ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর বৈরী আবহাওয়ার কারণে উপকূলে নোঙ্গর করেছে ৫ হাজার নৌযান