কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি (আব্দুর রহিম) : কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে এই প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অটোমেটিক এসল্ট রাইফেলসসহ গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশের বিশেষায়িত সংস্থা আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। অভিযানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে এপিবিএনের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ আরসা কমান্ডার ও তার এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে এপিবিএন।
শুক্রবার সকালে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান এপিবিএন-৮ এর অধিনায়ক এসপি শিহাব কায়সার খান। এসময় ময়নারঘোনা পুলিশ ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার আশফাকুজ্জামান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- প্রশিক্ষিত আরসা কমান্ডার মোহাম্মদ গোলাম হোসেন ও তার সহযোগী জাহেদ হোসেন। এসময় একটি যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অটোমেটিক এসল্ট রাইফেল, ৪৯১টি গুলি, চারটি এলজি পিস্তল, চারটি কার্তুজ, আটটি দেশীয় অস্ত্র ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
এপিবিএন-৮ এর অধিনায়ক এসপি শিহাব কায়সার খান বলেন, উখিয়ার বালুখালী-১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালানোর সময় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা পুলিশকে উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছুড়তে থাকে। ঘণ্টাব্যাপী দুই পক্ষের গোলাগুলির একপর্যায়ে পিছু হটে সন্ত্রাসীরা। এরপর সন্ত্রাসীদের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। অন্যদিকে টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ডাকাত দলের আস্তানায় অভিযান চালিয়েছে এপিবিএন।
আরেকটি পৃথক অভিযানে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন-১৬) পুলিশ সুপার (এসপি) তারিকুল ইসলাম জানান, টেকনাফ নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের নুরালীপাড়া সংলগ্ন পাহাড়ঘেরা গহীন অরণ্যে রোহিঙ্গা ডাকাত ও সন্ত্রাসীদের আস্তানার সন্ধানে ড্রোনের সাহায্যে অভিযান চালানো হয়। অস্ত্র উদ্ধার করা হলেও কাউকে আটক করা যায়নি।
মহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে এতে সহিংসতা করার পরিকল্পনা ছিল কিনা জানতে চাইলে এসপি শিহাব কায়সার বলেন, এ বিষয়ে এখনও কিছু বলা যাচ্ছে না। এছাড়া কোনো গ্রুপ এই অস্ত্র নিয়ে আসছে সেটাও জানা যায়নি। তবে রোহিঙ্গারা আসার পর থেকে এ ধরনের ভারী অস্ত্র কখনো দেখিনি।
গত এক সপ্তাহে উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক মাঝিসহ অন্তত তিনজন খুন হয়েছেন। এছাড়া হামলা ও পাল্টা হামলায় গুরুত্বর আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, ক্যাম্পে যেকোনো নাশকতা ও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কাজ করছে তারা। অভিযানের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারিও বৃদ্ধি করা হয়েছে।