কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি (আবদুর রহিম) : উখিয়ার একটি আবাসিক হোটেল থেকে ফ্যানের সাথে ঝুলানো অবস্থায় এক রোহিঙ্গা তরুণীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২ আগস্ট) বেলা ১২টার দিকে উখিয়া সদর পশ্চিম স্টেশনের আরাফাত হোটেল নামক আবাসিক হোটেলের চতুর্থ তলার ৩০৪ কক্ষ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় এই লাশটি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির একটি দল ঘটনাস্থলের প্রাথমিক সুরতহাল শেষ করার পর নিহত তরুণীর লাশ উখিয়া থানায় নিয়ে যায়। কালো বোরকা ও সাদা শার্ট পরিহিত তরুণীর মরদেহ ওড়না পেচানো অবস্থায় ঝুলন্ত ছিলো বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
আরফাত হোটেলের ম্যানেজার শাকুর মাহমুদ জানান, গত ১ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টার দিকে আমার অনুপস্থিতিতে এক হোটেল বয় এর সাথে কথা বলে ৩০৪ নং কক্ষটি ৩০০ টাকার বিনিময়ে ভাড়া নেন নুসরাত জাহান লিজা (২৩) নামে এক তরুণী। যেখানে তার ঠিকানা ছিল টেকনাফের হ্নীলা ও পেশা চাকুরীজীবি উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়াও পিতার নাম জিসান মিয়া ও মাতা রোজিনা এবং একটি ফোন নাম্বার উল্লেখ উল্লেখ করেন।
কিন্তু ঘটনার পরবর্তী তার আসল পরিচয় জানান কুতুপালং রেজিষ্ট্রার্ড ক্যাম্পের ডি ব্লকের ক্যাম্প সেক্রেটারী মাজেদ আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ছবি দেখে আমরা পরিচয় নিশ্চিত করি। নিহত তরুণী কুতুপালং রেজিষ্ট্রার্ড ক্যাম্পের ডি-ব্লকের বাসিন্দা আবদুল গফুরের মেয়ে ইয়াছমিন আকতার।
নিহত তরুণীর মাতা জহুরা খাতুন লাশ শনাক্তের পর জানান, তার মেয়ে সোমবার বিকেলে বাসা থেকে বেরিয়ে আসে। তার সাথে একজন এপিবিএন পুলিশ সদস্যের সম্পর্ক ছিল। হোটেলের রেজিষ্ট্রার্ড খাতায় লিপিবদ্ধ নাম্বারটি চেক করলে আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে সে দাবি করেন।
রোহিঙ্গা নারী জহুরা খাতুন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি এপিবিএন পুলিশকে বলেছিলাম, তোমার আত্নীয়দের নিয়ে এসো আমি মেয়েকে তোমার হাতে তুলে দিব। সে আমার মেয়েকে হোটেলে এনে কি করেছে এবং কেন হত্যা করা হয়েছে জানতে চাই বিচারও চাই।
ঘটনার সম্পর্কে জানতে চাইলে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ আলী বলেন, ”মধ্যরাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়। ভেতর থেকে রুমটি বন্ধ ছিলো, সকালে সিআইডির প্রাথমিক তদন্ত শেষে বেলা ১২টার দিকে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে৷
তিনি আরো বলেন, যেহেতু ফ্যানের সাথে ঝুলানো অবস্থায় লাশটি পাওয়া যায়, তাই অপমৃত্যু মামলা রুজু করে ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার মর্গে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর ঘটনার বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে বলে তিনি জানিয়েছেন।