মানবচিত্র ডেস্ক : ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অধীনে যে সুষ্ঠু ভোট হবে না তা দেশের জনগণ নিশ্চিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, জনগণ জানে না তারা নিজেদের ভোট দিতে পারবে কি-না। কিন্তু তারা (আওয়ামী লীগ) অতীতে যে কাজগুলো করেছে তাতে নিশ্চিত হয়ে গেছে এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না; সুষ্ঠু হবে না।
রোববার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনীতি কার্যালয়ে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, জবরদখলকারী ফ্যাসিবাদী, অনির্বাচিত সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য, মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা ১০ দফা দাবি দিয়েছি। সেই দাবি আদায় করার জন্য আমরা যে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছি, সেই আন্দোলনের মতবিনিময়ের অংশ হিসেবে আজকে আমরা ১২ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বসেছি। এরপর যেসব দল এবং জোট রয়েছে তাদের সঙ্গেও বসব।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আমাদের চলমান আন্দোলনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা করেছি এবং ভবিষ্যতে কর্মসূচি কী হওয়া উচিত এই আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য, কী ধরনের কর্মসূচি দেওয়া যেতে পারে সে বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলেছি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা ঐক্যমত হয়েছি আন্দোলনকে সামনে আরও বেগবান করে আমাদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা, গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সারাদেশে লক্ষ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা তা প্রত্যাহার দাবিতে এবং যারা কারাবন্দি রয়েছে তাদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে একমত হয়েছি।
আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, তারা দেশে সম্পূর্ণভাবে একটি একদলীয় শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দিচ্ছে। তারা মুখে বলে এক, কাজ করে আরেক। আওয়ামী লীগ আজকে এই দেশে সবচেয়ে বড় যে ক্ষতিটা তারা করেছে, দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের যে ব্যবস্থা, বহুমাত্রিক ব্যবস্থা সেটা তারা ধ্বংস করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, যখন আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে, তখন বিএনপি চেয়ারপারসন এবং খালেদা জিয়া বলেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দিয়ে বাংলাদেশে একটি চিরস্থায়ীভাবে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হলো এবং দেশে একটি অস্থিতিশীল অনিশ্চয়তা এবং সহিংসতার দার উন্মুক্ত করা হলো। আজকে কথাটা অপমানিত হয়েছে। ২০১৪ নির্বাচন বলেন, ২০১৮ নির্বাচন বলেন।
১২ দলীয় জোটের নেতাদের মধ্যে ছিলেন- জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মাদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, এনডিপির চেয়ারম্যান ক্বারী মো. আবু তাহের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাগপার সিনিয়র সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগের যুগ্ম মহাসচিব মো. তফাজ্জল হোসেন।
বিএনপি লিয়াঁজো কমিটির সদস্যদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ শাহজাহান ও আব্দুল আব্দুল আউয়াল মিন্টু উপস্থিত ছিলেন।