জাতীয় ডেস্ক : রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, কারসাজি করে পণ্য মূল্য যাতে কেউ বাড়াতে না পারে সেজন্য সরকারকে আগাম পরিকল্পনা করতে হবে। একইসঙ্গে তিনি জনভোগান্তি সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) জাতীয় রফতানি ট্রফি ২০১৭-১৮ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
রাজধানীর রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে এই অনুষ্ঠানে বঙ্গভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন রাষ্ট্রপতি।
আবদুল হামিদ বলেন, পণ্যের চাহিদা, উৎপাদন, মজুত ও ঘাটতির সঠিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের মাধ্যমে আগাম পরিকল্পনা নেওয়া গেলেই অসাধু চক্র কোনো সুযোগ নিতে পারবে না।
তিনি বলেন, “সিন্ডিকেট আজকাল সবচেয়ে আলোচিত শব্দ। যে-কোনো সেক্টরে পণ্যের দাম বাড়লে বা কমলে সিন্ডিকেটকেই দায়ী করা হয়। যারা সিন্ডিকেট করে, যারা জনভোগান্তি বাড়ায় তাদের আইনের আওতায় আনতে সরকারকে কঠোর হতে হবে। পাশাপাশি কিছু অসাধু ব্যক্তির জন্য যাতে গোটা ব্যবসায়ী সমাজের সুনাম ক্ষুণ্ন না হয় সে ব্যাপারেও আপনাদের সজাগ থাকতে হবে এবং সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে।
রোজার পর মাসে নিত্য পণ্যের দাম বাড়ায় উষ্মা প্রকাশ করে আবদুল হামিদ বলেন, “এখন পবিত্র রমজান মাস চলছে। সামনে আসছে ইদুল ফিতর। আমাদের দেশে রোজা, ইদসহ বিভিন্ন উৎসব পার্বণ এলেই দেখা যায় যে, কিছু কিছু পণ্যের দাম হঠাৎ করেই বেড়ে যায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জাতীয়, ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব উপলক্ষ্যে সাধারণত জিনিসপত্রের দাম কমানো হয় যাতে জনসাধারণ পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দের সাথে উৎসবে শরিক হতে পারে।”
কারসাজি করে পণ্যমূল্য বাড়ানো হয় উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, “বাজার অর্থনীতিতে দ্রব্যমূল্য নির্ধারিত হয় চাহিদা ও সরবরাহ পরিস্থিতি বিবেচনা করে। কিন্তু আমাদের এখানে চাহিদা সরবরাহের সমন্বয়হীনতা নয় বরং কারসাজি করে পণ্যের দাম বাড়ানো হয়। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।”
বছর দুয়েক আগে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সঠিক পরিকল্পনার ওপর জোর দেন রাষ্ট্রপতি।
তিনি বলেন, “অনেক সময় সঠিক পরিকল্পনা ও তথ্য-উপাত্তের অভাবেও পণ্যের দাম উঠানামা করতে পারে। যেমন- বছর দুয়েক আগে হঠাৎ করে দেশে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় এত বেশি পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল যে, শেষদিকে অনেক আমদানিকারককে তাদের পেঁয়াজ ফেলে দিতে হয়েছে। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগে আপনাদের ভূমিকাই মুখ্য। ব্যবসা করা সরকারের কাজ নয়। সরকারের কাজ হচ্ছে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রসারে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা। আর সরকার সে কাজটাই করছে। সরকার কখনো আপনাদের কাজে হস্তক্ষেপ করতে চায় না।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস-চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রফতানি ট্রফি অর্জনকারী জাবের অ্যান্ড জুবায়ের ফেব্রিক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম রফিকুল ইসলাম নোমান।