দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি (আল আমিন) : দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব প্রফেসর মোঃ নওশের ওয়ান ভ্যান রিক্সাওয়ালাদের কাছে পেলেই নির্দ্বিধায় বুকে জড়িয়ে ধরেন এবং খোঁজখবর নেন অসহায় পরিবারের লোকজনের।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে হৃদয়বান এই মানুষটি ১৯৭৭ সালের ৩ জানুয়ারী ফুলবাড়ী উপজেলার রামভদ্রপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, তার পিতার নাম মরহুম মো: আ: ছালাম, যিনি পেশায় ছিলেন একজন শিক্ষক, সাদামাটা নিরহংকার মমতাময়ী মায়ের নাম শিরিনা খাতুন।
শৈশবে তিনি নিজ গ্রামের প্রাইমারি স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করেন। ৫ম শ্রেনীতে পান বৃত্তি, এরপর ভর্তি হন সুজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সেখানে মাধ্যমিক শিক্ষা অর্জন করেন, ৮ম শ্রেনীতেও পান বৃত্তি, এর পর ভর্তি হন ফুলবাড়ী সরকারি কলেজে, সেখান থেকে ইন্টারমিডিয়েট পড়া শেষে উচ্চ ডিগ্রি অর্জনের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, সেখান থেকে ইংরেজিতে স্নাতক সম্মান ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়াও তিনি হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের IRT থেকে PGD in ICT অর্থাৎ এক বছর মেয়াদী Post Graduate Diploma in Information and Communication Technology কোর্সটি সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি পিএইচডি অধ্যয়নরত।
শিক্ষাজীবন শেষে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। কর্মজীবনের শুরুতেই কিছুদিন তিনি বিরামপুর ডিগ্রী কলেজে শিক্ষকতা করেন এবং এরপর যোগদান করেন দিনাজপুরের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হাজী মোহাম্মদ বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে। সেখানে তিনি নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করতে থাকেন এবং বর্তমানে তিনি ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় চেয়ারম্যান। সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন তাকে নিয়ে যায় মর্যাদার অনন্য এক স্থানে। ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় চেয়ারম্যান এর পাশাপাশি তিনি সোশ্যাল সায়েন্স এন্ড হিউম্যানিটিজ অনুষদের ডীন হিসেবে ও দায়িত্ব পালন করেন। উল্লেখ্য ইতিপূর্বে তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ও ডীন এর দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়াও তিনি দীর্ঘদিন যাবত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দল এর সাধারণ সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করছেন। চাকুরি জীবনের শুরুতে তিনি সর্বোচ্চ ভোটে শিক্ষক সমিতির সদস্য ও নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিছুদিন যাবত তিনি জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের ও দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও অল্প কিছুদিন পূর্বে তিনি ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (UTAB) এর কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক পদে মনোনীত হয়েছেন।
জাতীয়তাবাদী রাজনীতির বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত তিনি। এছাড়া জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন এর আজীবন সদস্যও তিনি।
কথা হয় হৃদয়বান এই মানুষটির সঙ্গে, তিনি বলেন সম্মান দেওয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ। আল্লাহ পাকের অশেষ রহমতে এবং তার দয়ায় আমি সন্তুষ্ট এবং মহান আল্লাহ পাকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমাকে তিনি যে সম্মান দিয়েছেন তাতেই আমি সন্তুষ্ট এবং আমি তাই সবসময় চেষ্টা করি সাদামাটা জীবন যাপন করার এবং গরিব অসহায় মানুষের পাশে থাকার। সাধারণ মানুষ সমাজের উচ্চ পদে আসীন এবং প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে চায় একটু সুন্দর আচরণ চায় সুখে দুখে তাদের পাশে দাঁড়াক। খুব বেশি তাদের চাওয়া পাওয়া নেই। সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকায় আমাদের বেতন-ভাতা হয় এবং সেই টাকা দিয়েই আমরা আজ প্রতিষ্ঠিত এবং আমাদের সংসার চালাই। তাহলে তাদের প্রতি কি আমাদের কোন দায়িত্ব কর্তব্য নেই? সেই দায়িত্ব এবং কর্তব্যবোধ থেকেই আমি চিন্তা করি এবং গরিব অসহায় মানুষকে দেখলে আমার ইচ্ছে করে তাদেরকে একটু বুকে জড়িয়ে ধরি এবং তাদের কাছে সুখ দুঃখের কিছু কথা শুনি তাদের পাশে দাড়াই এবং তাদের সমবেদনা জানাই। আমার কাছে মনে হয় তারাই সুদ ঘুষ দুর্নীতিমুক্ত প্রকৃত মানুষ, তাদের ঘাম ঝরানো হালাল উপার্জন আমাকে উৎসাহিত করে এবং আমাকেও হালাল উপার্জন করতে শেখায়। আর সবচেয়ে বড় কথা মানুষ মানুষের জন্য এই চিন্তা থেকেই আসুন আমরা সবাই সকল প্রকার ভেদাভেদ ভুলে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সমাজের সকল অসহায় ও অবহেলিত মানুষদের পাশে দাঁড়াই এবং তাদের পাশে থেকে তাদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করি। আমাদের একটি সদুপদেশ বদলে দিতে পারে তাদের জীবন বদলে দিতে পারে তাদের জীবনের গতিপথ, হাসি ফোটাতে পারে নিরীহ ও অসহায় এই মানুষগুলোর মুখে। আর আমরা যদি সবাই এভাবে চিন্তা করি তাহলে বদলে যেতে পারে আমাদের এই সমাজ এবং আমাদের এই রাষ্ট্র।