প্রেস বিজ্ঞপ্তি : অনলাইনে ভুয়া পিএইচডি ডিগ্রির অভিযোগে অধ্যক্ষ জসিম উদ্দীন আহম্মেদসহ দুই শিক্ষককে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছেন রাজধানীর আইডিয়াল কলেজের শিক্ষকরা। একই সঙ্গে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কলেজের ক্লাসসহ সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। কিছুদিন আগে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের তদন্তে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে।
অধ্যক্ষ ও অপর দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভুয়া পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন, শিক্ষক-কর্মচারীদের মানসিক নির্যাতন ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলন করে অধ্যক্ষ জসিম উদ্দীন আহম্মেদ এবং দুই শিক্ষক তৌফিক আজিজ চৌধুরী ও তরুণ কুমার গাঙ্গুলীর বিরুদ্ধে ভুয়া পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের ও প্রতিষ্ঠানটিতে নানা আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-কর্মচারীরা।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকরা জানান, কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ জসিম উদ্দীন আহম্মেদ ২০১৭ সালে মার্চ মাসে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদানের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনৈতিক কার্যক্রম, অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠা শুরু হয়। অধ্যক্ষ ও মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক তৌফিক আজিজ চৌধুরী, বাংলা বিভাগের শিক্ষক তরুণ কুমার গাঙ্গুলী, গণিত বিভাগের শিক্ষক মনিরুজ্জামানসহ আরও কতিপয় শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে তাদের ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের মতো পরিচালনা করেছেন।
শিক্ষকরা আরও বলেন, অধ্যক্ষ কলেজে যোগদানের প্রথম বছরেই তার অনৈতিক কার্যক্রম নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ এনে চারজন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করেছেন, একাধিক কর্মচারীকে চাপ প্রয়োগে চাকরি থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছেন এবং আরও অনেক শিক্ষক কর্মচারীকে চাকরিচ্যুতির হুমকি দিচ্ছেন। আগে তিনি যেসব কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন, প্রতিটি কলেজেই দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের কারণে তিনি অভিযুক্ত ও তিরস্কৃত হয়েছেন।
অভিযোগকারীরা জানান, অধ্যক্ষ, শিক্ষক তৌফিক আজিজ চৌধুরী, শিক্ষক তরুণ কুমার গাঙ্গুলী অনলাইনে বা কোন জালিয়াতির মাধ্যমে মালিবাগ মোড়ে অবস্থিত ‘লিংকনস্ হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
অধ্যক্ষের সব অপকর্মের সহযোগী শিক্ষক তৌফিক আজিজ চৌধুরী প্রথমে সহকারী অধ্যাপক ও আবার তিন বছরের ব্যবধানে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন। তিনি বর্তমান অধ্যক্ষের যোগদানের পর থেকে অবৈধপন্থায় গভর্নিং-বডির ‘শিক্ষক প্রতিনিধি’ সদস্য হিসেবে যোগ দিয়ে সব রকমের দুর্নীতি ও অনিয়মগুলো আড়াল করায় সহযোগিতা করেছেন। একইভাবে পদোন্নিতি নিয়েছেন অধ্যক্ষের আরেক সহযোগী তরুণ কুমার গাঙ্গুলী।
প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অনিয়ম তুলে ধরে শিক্ষকরা বলেন, শিক্ষার্থীদের লেনদেনের জন্য প্রতিষ্ঠানের অনেকগুলো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকলেও ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহারে অধ্যক্ষ সাহেবের ও তার সহযোগীদের বেশ অনীহা দেখা যায়। ইদানিং শিক্ষার্থীদের থেকে প্রতিষ্ঠানের পাওনা অধ্যক্ষ সাহেবের মালিকানাধীন ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আদায় করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।